মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০১৫

শাওয়ালের ছয় রোজার ফজীলত

শাওয়ালের ছয় রোজার ফজীলত
═❖═════❖═════❖═
ইমরান বিন বদরী
নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম আম্মা বাদ।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানব সৃষ্টি করেছেন,তার ইবাদতের জন্য আর তাই প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে আমাদের এ সূত্রটি সামনে রাখতে হয়।ইবাদতের মাধ্যমেই বান্দা মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভে ধন্য হতে পারে। প্রতিটি নেক কাজেই রয়েছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিদান প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে করিমের সূরা আয-যারিয়াত এ বলেন- وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।(আয়াত ৫৬)
আরবি ১২ মাসের দশম মাস শাওয়াল। রমজানের পরের মাস। ইবাদত বা আমলিয়াতের ক্ষেত্রে এই মাসটিও গুরুত্বপূর্ণ।এ মাসে বিশেষভাবে ছয়টি রোজা পালনের কথা বলা হয়েছে। ইসলামী পরিভাষায় এগুলোকে 'শাওয়াল মাসের ছয় রোজা' বলা হয়।শাওয়াল মাসের ছয় রোজা সম্পর্কে সহিহ হাদিসে বিভিন্ন আলোচনা রয়েছে। 
যেমন═➲  مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ ، رواه مسلم 
হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখবে অতপর শাওয়ালে ছয়টি রোজা পালন করবে সে যেন যুগভর রোজা রাখল। (সহীহ মুসলিম:১১৬৪)
═➲ হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,হজরত ইয়াহইয়া ইবনুূু আবূ কাসীর (রহঃ) থেকে বর্নিত “প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার কথার পর আরও আছে কেননা তোমার জন্য প্রতিটি ভাল কাজের পরিবর্তে তার দশগুন প্রতিদান রয়েছে। অতএব তা এক বছর সাওম (রোযা) পালনের সমানই হল।(সহিহ মুসলিম)
═➲হযরত উবাইদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত.তিনি বলেন,একদিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম,ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,“তোমার উপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে”কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে. রমজানের রোজা রাখ এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখ,তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।(তিরমিযি ১/১৫৭পৃ:)
নফল ইবাদতগুলোর মধ্যে নফল রোজা বান্দাকে অতি সহজেই মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয়। কারণ, রোজা এমন একটি ইবাদত,যা জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঢালস্বরূপ এবং এর প্রতিদান স্বয়ং আল্লাহ দিয়ে থাকেন।শাওয়াল মাসের ছয়টি রোযা: সারা বছর রোযার ছোয়াব পাওয়ার একটি সূবর্ণ সূযোগ।
═➲ উম্মুল মুমেনীন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন,তোমাদের সাধ্যে যতটুকু কুলোয় ততটুকু (নফল)আমল কর,কারণ তোমরা (আমল করতে করতে) ক্লান্ত হয়ে না পড়া পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা(সওয়াব দান)বন্ধ করেন না।(সহীহ বুখারী শরীফ)
প্রত্যেক সুস্থ ও সবল ব্যক্তির উচিত শাওয়াল মাসের ফজিলতপূর্ণ ছয়টি রোজা রেখে মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভে ধন্য হওয়া।শাওয়ালের রোজা পুরুষ, মহিলা, যুবক, বৃদ্ধসহ সকলেই রাখতে পারবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও শাওয়ালের এ ছয় রোজা রাখতেন এবং উম্মতকে রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, সেজন্য এ রোজা রাখা আমাদের জন্য উচিত। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে যেন শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা এখলাসের সাথে রাখার তাওফিক দান করেন। আমিন ।
(বন্ধুরা আমরা কেও ভুলের ঊর্ধে নই,আমার লেখাতেও ভুল হতে পারে।তাই মনের অজান্তে জ্ঞানের স্বল্পতায় ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন