কালজয়ী বিখ্যাত আলেম মওলানা রুমি রহ.
❋═════ ✏ইমরান বিন বদরী ≪
মওলানা রুমি ও মসনবি শরিফ নাম দুটি আমাদের মধ্যে বহুল পরিচিত। ধর্মীয় মাহফিল, মাদরাসা, খানকাহ সর্বত্র এখনও মওলানা রুমি (রহ.)রচিত মসনবি শরিফের বয়েত পাঠ ও ব্যাখ্যা করে ভক্ত হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটানো হয়। বিশেষত, দর্শন ও সাহিত্যাঙ্গনে মওলানা রুমির জনপ্রিয়তা কালজয়ী। তাসাউফ,তরিকত,আল্লাহ প্রেমের সাধনা বলতে যে অর্থ গ্রহণ করা হয় তার অমর বিশ্বকোষ মসনবি।ইতিহাসের বিশ্ব বিখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (র)।মাওলানা রুমি প্রাথমিক জীবনে সারা দিন হাদিস,তফসির ইত্যাদি ধর্ম গ্রন্থের কিতাব পাঠে সময় ব্যায় করতেন।মাওলানা রুমির আশে পাশে লক্ষ লক্ষ মুরিদান,আলেম, মুহাদ্দিস বসে থাকতেন শুধু তার মুখের একটু বানি শোনার জন্য,কিন্তু যখন তার বয়স ৪০ তখন কোথাকার এক পাগল শামস তাব্রিজ নামের এক মস্ত বড় আউলিয়া তার দিনের খাওয়া ও রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেন।
মওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি (مولانا جلال الدين محمد رومي)
তুর্কি ভাষায় Mevlânâ Celâleddin Mehmed Rumi (১২০৭ - ১২৭৩) মাওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ বাল্খি নামেও পরিচিত, কিন্তু বিশ্ব তাকে সংক্ষেপে রুমি নামে জানে। তিনি ত্রয়োদশ শতকের একজন ফার্সি কবি, ধর্মতাত্ত্বিক এবং সুফি দর্শনের শিক্ষক ছিলেন।রুমি খোরাসানের (বর্তমান আফগানিস্তান ) বলখ শহরে ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর (৬০৪ হিজরি ৬ই রবিউল আউয়াল) জন্মগ্রহন করেন।তাঁদের পরিবার ছিল বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও ধর্মতত্তবিদ পরিবার ।তার পিতা শেখ বাহাউদ্দিন ছিলেন সে যুগের একজন বিখ্যাত বুজুর্গ আলেম। পিতার সাথে পবিত্র হজ পালনের পর সিরিয়া গমন করেন। শেষ পর্যন্ত পূর্ব রোমে সালজুকি বংশের দ্বাদশতম শাসক, সুলতান আলাউদ্দিন কায়কোবাদের (৬১৬-৬৩৪ হিজরি) আমন্ত্রণে তার রাজধানী (বর্তমান তুরস্কের) কুনিয়ায় গমন করেন এবং জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে সেখানে অবস্থান করেন।
জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি তার পিতার কাছেই প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষা হাসিল করেন। হিজরি ৬২৮ সনে তিনি বুজুর্গ পিতাকে হারান এবং ২৪ বছর বয়সেই পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। পিতার ইন্তেকালের এক বছর পর তিনি সৈয়দ বোরহান উদ্দিন মুহাক্কেক তিরমিজির সাহচর্য গ্রহণ করেন। সৈয়দ বোরহান উদ্দিন ছিলেন মওলানা রুমির পিতার সাগরেদ। সৈয়দ বোরহান উদ্দিনের পরামর্শক্রমে দেশ সফরের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়, উচ্চতর জ্ঞান আহরণ ও তরিকতের বুজুর্গদের সাহচর্য লাভের জন্য দামেস্ক সফর করেন। দামেস্কে জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতায় পূর্ণতা হাসিলের পর তিনি পুনরায় কুনিয়া ফিরে আসেন। দীর্ঘকাল কুনিয়ায় অবস্থানই মওলানা রুমি হিসেবে তার খ্যাতির আসল কারণ। কেননা কুনিয়া ছিল পূর্ব রোমের অন্যতম নগরী এবং তা রুমিয়াতুছ ছোগরা বা ছোট রুম নামে প্রসিদ্ধ ছিল। মওলানা রুমি সে যুগের প্রচলিত অধিকাংশ জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী ছিলেন এবং আমির-ওমরাহ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মওলানা রুমি (রহ.) কুনিয়ায় অতি সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে শিক্ষাদীক্ষা ও অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন। এমন সময় এক মহান মজজুুব অলির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয় এবং তার জীবনধারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। সেই মহাসাধকের নাম শামসে তাবরিজি।
তিনি (শামসে তাবরিজি )মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির অন্তরে প্রেমের এমন আগুন জ্বালিয়ে দেন, যার ফলে তার অন্তর থেকে একমাত্র প্রেমাস্পদ আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
শামস তাব্রিজের মত পাগলের ভেতর আল্লাহর নুরী জ্ঞানের বিশাল ভাণ্ডার দেখে মাওলানা রুমি বলে উঠলেন---"ওরে খোঁদার ভাব মিলে নাই মাওলানায়,কি দেখিয়া এত ফালফালায় শরীয়তের হুজুর ব্যাটায়"।
শামসে তাবরিজির সংস্পর্শে মওলানা রুমি এভাবে উদভ্রান্ত ও পাগল হয়ে যাওয়ার ফলে কুনিয়ার বাসিন্দারা শামসে তাবরিজির ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে। এর ফলে তিনি কুনিয়া ছেড়ে চলে যান। বলা হয় যে, মওলানা রুমির ভক্তরা তাকে হত্যা করে।শামসে তাবরিজিকে হারানোর পর মওলানার অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়। তবে ধীরে ধীরে আত্মস্থ হলে ঝরনার মতো অজস্র ধারায় কবিতা বলতে থাকেন।
মওলানা রুমির অবিস্মরণীয় রচনাবলির মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে- দিওয়ানে শামসে তাবরিজি। মওলানা রুমি রচনার সময়কালে শেষ জীবনে অধিকাংশ সময় তার বিশ্ববিখ্যাত মসনবি শরিফ রচনার কাজেই ব্যয় করেন।মসনবি শরিফকে তৌহিদের এবং শরিয়তের জ্ঞানের বিশ্বকোষ নামে অভিহিত করা হয়। মসনবি শরিফ মওলানা রুমির (রহ.) চিন্তা, চেতনা ও প্রেমের সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল ও পূর্ণাঙ্গ সৃষ্টি ।
#বিশ্ব বিখ্যাত মসনবি শরিফ রচনাঃ-মাওলানা রুমি শামস তাব্রিজের দেওয়া তার সিনায় মারিফতের ফায়েজ কে চির-স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২২ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে রচনা করেন মসনবি শরিফ।যা সুবিশাল ৪০ হাজার লাইনের একটা মহাজ্ঞানের সমাহার।মাওলানা রুমি তার বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব মসনবির প্রশংসায় বলেছেন যে- "কুরআনের সমস্ত মগজ আমি রুমি চেটে খেয়ে ফেলেছি,শুধু তার হাড় গুলি রেখে দিয়েছি শরিয়তের অল্প বুদ্ধির আলেম রূপী কুকুরদের জন্য"
তাহার এই উক্তিতে বুঝতে আর বাকি থাকে না যে তিনি কোন পর্যায়ের আলেম। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সাধক কবি মওলানা জালাল উদ্দিন রুমি ৬৭২ হিজরির ৫ জমাদিউল আখের (১২৭৩ ইং) ৬৮ বছর বয়সে সূর্যাস্তের সময় পরম প্রেমাস্পদ আল্লাহর সনি্নধানে চলে যান। বর্তমান তুরস্কের কুনিয়া শহরে তার সমাধি বিশ্বের আল্লাহ প্রেমিকদের জিয়ারতগাহ। পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার আগে তিনি তার মৃত্যু সম্পর্কে কিছু উক্তি করে গেছেন তা হল -
যেদিন আমি মরে যাব, আমার কফিন এগিয়ে যাবে
সেদিন ভেবো না, আমার অন্তর এই ধরাধামে রয়ে গেছে!
তোমরা অযথা অশ্রু বিসর্জন দিও না, হা-হুতাশ করো না
হায়রে লোকটা চলে গেল’ এই বলে বিলাপ করো না।
আমার সমাধিকে অশ্রুজলে কর্দমাক্ত করে দিও না।
আমিতো মহামিলনের মহাযাত্রার অভিযাত্রী।
আমায় কবরে শোয়ালে ‘বিদায়’ জানাবে না,
কবরতো ইহকাল-পরকালের মাঝে একটা পর্দা মাত্র
অনন্ত আশীর্বাদের ফোয়ারা।
তোমরা অবতরণ দেখেছ এবার চেয়ে দেখ আমার আরোহণ।
চন্দ্র-সূর্যের অস্তাগমন কি বিপজ্জনক?
তোমাদের কাছে যেটা অস্তাগমন, আসলে সেটাই উদয়ন।
❋═════ ✏ইমরান বিন বদরী ≪
মওলানা রুমি ও মসনবি শরিফ নাম দুটি আমাদের মধ্যে বহুল পরিচিত। ধর্মীয় মাহফিল, মাদরাসা, খানকাহ সর্বত্র এখনও মওলানা রুমি (রহ.)রচিত মসনবি শরিফের বয়েত পাঠ ও ব্যাখ্যা করে ভক্ত হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটানো হয়। বিশেষত, দর্শন ও সাহিত্যাঙ্গনে মওলানা রুমির জনপ্রিয়তা কালজয়ী। তাসাউফ,তরিকত,আল্লাহ প্রেমের সাধনা বলতে যে অর্থ গ্রহণ করা হয় তার অমর বিশ্বকোষ মসনবি।ইতিহাসের বিশ্ব বিখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (র)।মাওলানা রুমি প্রাথমিক জীবনে সারা দিন হাদিস,তফসির ইত্যাদি ধর্ম গ্রন্থের কিতাব পাঠে সময় ব্যায় করতেন।মাওলানা রুমির আশে পাশে লক্ষ লক্ষ মুরিদান,আলেম, মুহাদ্দিস বসে থাকতেন শুধু তার মুখের একটু বানি শোনার জন্য,কিন্তু যখন তার বয়স ৪০ তখন কোথাকার এক পাগল শামস তাব্রিজ নামের এক মস্ত বড় আউলিয়া তার দিনের খাওয়া ও রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেন।
মওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি (مولانا جلال الدين محمد رومي)
তুর্কি ভাষায় Mevlânâ Celâleddin Mehmed Rumi (১২০৭ - ১২৭৩) মাওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ বাল্খি নামেও পরিচিত, কিন্তু বিশ্ব তাকে সংক্ষেপে রুমি নামে জানে। তিনি ত্রয়োদশ শতকের একজন ফার্সি কবি, ধর্মতাত্ত্বিক এবং সুফি দর্শনের শিক্ষক ছিলেন।রুমি খোরাসানের (বর্তমান আফগানিস্তান ) বলখ শহরে ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর (৬০৪ হিজরি ৬ই রবিউল আউয়াল) জন্মগ্রহন করেন।তাঁদের পরিবার ছিল বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও ধর্মতত্তবিদ পরিবার ।তার পিতা শেখ বাহাউদ্দিন ছিলেন সে যুগের একজন বিখ্যাত বুজুর্গ আলেম। পিতার সাথে পবিত্র হজ পালনের পর সিরিয়া গমন করেন। শেষ পর্যন্ত পূর্ব রোমে সালজুকি বংশের দ্বাদশতম শাসক, সুলতান আলাউদ্দিন কায়কোবাদের (৬১৬-৬৩৪ হিজরি) আমন্ত্রণে তার রাজধানী (বর্তমান তুরস্কের) কুনিয়ায় গমন করেন এবং জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে সেখানে অবস্থান করেন।
জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি তার পিতার কাছেই প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষা হাসিল করেন। হিজরি ৬২৮ সনে তিনি বুজুর্গ পিতাকে হারান এবং ২৪ বছর বয়সেই পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। পিতার ইন্তেকালের এক বছর পর তিনি সৈয়দ বোরহান উদ্দিন মুহাক্কেক তিরমিজির সাহচর্য গ্রহণ করেন। সৈয়দ বোরহান উদ্দিন ছিলেন মওলানা রুমির পিতার সাগরেদ। সৈয়দ বোরহান উদ্দিনের পরামর্শক্রমে দেশ সফরের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়, উচ্চতর জ্ঞান আহরণ ও তরিকতের বুজুর্গদের সাহচর্য লাভের জন্য দামেস্ক সফর করেন। দামেস্কে জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতায় পূর্ণতা হাসিলের পর তিনি পুনরায় কুনিয়া ফিরে আসেন। দীর্ঘকাল কুনিয়ায় অবস্থানই মওলানা রুমি হিসেবে তার খ্যাতির আসল কারণ। কেননা কুনিয়া ছিল পূর্ব রোমের অন্যতম নগরী এবং তা রুমিয়াতুছ ছোগরা বা ছোট রুম নামে প্রসিদ্ধ ছিল। মওলানা রুমি সে যুগের প্রচলিত অধিকাংশ জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী ছিলেন এবং আমির-ওমরাহ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মওলানা রুমি (রহ.) কুনিয়ায় অতি সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে শিক্ষাদীক্ষা ও অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন। এমন সময় এক মহান মজজুুব অলির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয় এবং তার জীবনধারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। সেই মহাসাধকের নাম শামসে তাবরিজি।
তিনি (শামসে তাবরিজি )মওলানা জালাল উদ্দিন রুমির অন্তরে প্রেমের এমন আগুন জ্বালিয়ে দেন, যার ফলে তার অন্তর থেকে একমাত্র প্রেমাস্পদ আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
শামস তাব্রিজের মত পাগলের ভেতর আল্লাহর নুরী জ্ঞানের বিশাল ভাণ্ডার দেখে মাওলানা রুমি বলে উঠলেন---"ওরে খোঁদার ভাব মিলে নাই মাওলানায়,কি দেখিয়া এত ফালফালায় শরীয়তের হুজুর ব্যাটায়"।
শামসে তাবরিজির সংস্পর্শে মওলানা রুমি এভাবে উদভ্রান্ত ও পাগল হয়ে যাওয়ার ফলে কুনিয়ার বাসিন্দারা শামসে তাবরিজির ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে। এর ফলে তিনি কুনিয়া ছেড়ে চলে যান। বলা হয় যে, মওলানা রুমির ভক্তরা তাকে হত্যা করে।শামসে তাবরিজিকে হারানোর পর মওলানার অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়। তবে ধীরে ধীরে আত্মস্থ হলে ঝরনার মতো অজস্র ধারায় কবিতা বলতে থাকেন।
মওলানা রুমির অবিস্মরণীয় রচনাবলির মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে- দিওয়ানে শামসে তাবরিজি। মওলানা রুমি রচনার সময়কালে শেষ জীবনে অধিকাংশ সময় তার বিশ্ববিখ্যাত মসনবি শরিফ রচনার কাজেই ব্যয় করেন।মসনবি শরিফকে তৌহিদের এবং শরিয়তের জ্ঞানের বিশ্বকোষ নামে অভিহিত করা হয়। মসনবি শরিফ মওলানা রুমির (রহ.) চিন্তা, চেতনা ও প্রেমের সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল ও পূর্ণাঙ্গ সৃষ্টি ।
#বিশ্ব বিখ্যাত মসনবি শরিফ রচনাঃ-মাওলানা রুমি শামস তাব্রিজের দেওয়া তার সিনায় মারিফতের ফায়েজ কে চির-স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২২ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে রচনা করেন মসনবি শরিফ।যা সুবিশাল ৪০ হাজার লাইনের একটা মহাজ্ঞানের সমাহার।মাওলানা রুমি তার বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব মসনবির প্রশংসায় বলেছেন যে- "কুরআনের সমস্ত মগজ আমি রুমি চেটে খেয়ে ফেলেছি,শুধু তার হাড় গুলি রেখে দিয়েছি শরিয়তের অল্প বুদ্ধির আলেম রূপী কুকুরদের জন্য"
তাহার এই উক্তিতে বুঝতে আর বাকি থাকে না যে তিনি কোন পর্যায়ের আলেম। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সাধক কবি মওলানা জালাল উদ্দিন রুমি ৬৭২ হিজরির ৫ জমাদিউল আখের (১২৭৩ ইং) ৬৮ বছর বয়সে সূর্যাস্তের সময় পরম প্রেমাস্পদ আল্লাহর সনি্নধানে চলে যান। বর্তমান তুরস্কের কুনিয়া শহরে তার সমাধি বিশ্বের আল্লাহ প্রেমিকদের জিয়ারতগাহ। পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার আগে তিনি তার মৃত্যু সম্পর্কে কিছু উক্তি করে গেছেন তা হল -
যেদিন আমি মরে যাব, আমার কফিন এগিয়ে যাবে
সেদিন ভেবো না, আমার অন্তর এই ধরাধামে রয়ে গেছে!
তোমরা অযথা অশ্রু বিসর্জন দিও না, হা-হুতাশ করো না
হায়রে লোকটা চলে গেল’ এই বলে বিলাপ করো না।
আমার সমাধিকে অশ্রুজলে কর্দমাক্ত করে দিও না।
আমিতো মহামিলনের মহাযাত্রার অভিযাত্রী।
আমায় কবরে শোয়ালে ‘বিদায়’ জানাবে না,
কবরতো ইহকাল-পরকালের মাঝে একটা পর্দা মাত্র
অনন্ত আশীর্বাদের ফোয়ারা।
তোমরা অবতরণ দেখেছ এবার চেয়ে দেখ আমার আরোহণ।
চন্দ্র-সূর্যের অস্তাগমন কি বিপজ্জনক?
তোমাদের কাছে যেটা অস্তাগমন, আসলে সেটাই উদয়ন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন