সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১৬

মসজিদ নির্মাণ এর ফজিলত।

মসজিদ নির্মাণ এর ফজিলত।================• ✏ইমরান বিন বদরী 
সমস্ত প্রশংসা সৃষ্টিজগতের রব রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালার জন্য; আর সালাত (দুরূদ) ও সালাম আমাদের নবী দোজাহানের সরদার বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী সায়্যাদুল মুরসালীন সাফিউল মুজ্নেবিন খাতামান নাবিয়্যীন হাবিবুল্লাহ প্রিয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি।
মসজিদ (আরবিতে: مسجد ) শব্দের অর্থ সেজদা করার স্থান।মসজিদ আমাদের দলবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য নির্মিত স্থাপনা।সাধারণভাবে, যেসব ইমারত বা স্থাপনায় মুসলমানেরা একত্র হয়ে প্রাত্যহিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ (আরবি: صلاة) আদায় করেন,তাকে মসজিদ বলে।আবার যেসব বড় আকারের মসজিদগুলো নিয়মিত নামাজের সাথে সাথে শুক্রবারের জুম'আর (صلاة الجمعة) নামাজ আদায় হয় এবং অন্যান্য ইসলামিক কার্যাবলী সম্পাদিত হয়,সেগুলো জামে মসজিদ (مسجد جامع) নামে অভিহিত।
মসজিদ আমাদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর প্রাণকেন্দ্র।
নামাজ যে কোনো পাক জায়গায় পড়া যায়।তবে মসজিদে নামাজ পড়ার সওয়াব অত্যধিক।পাঞ্জেগানা মসজিদে এক রাকায়াত বাইরে ২৫ রাকাত,জুমআর মসজিদে এক রাকায়াতে বাইরে ৫ শত রাকায়াতের,মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববীর এক রাকায়াত ৫০ হাজার রাকায়াতের এবং মসজিদুল হারামের এক রাকায়াত বাইরে এক লাখ রাকায়াত নামাজের সমান।এতেই বুঝা যায় যে,মসজিদে নামাজ পড়লে কি সওয়াব হয়।মসজিদ নির্মাণ ও উহার আবাদ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনুল কারীমে ➲ মহান আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللّهِ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلاَةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلاَّ اللّهَ فَعَسَى أُوْلَـئِكَ أَن يَكُونُواْ مِنَ الْمُهْتَدِينَ
নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে। (সূরা তওবা আয়াত ১৮)
উক্ত আয়াতের আলোকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে,মসজিদ আবাদ করবে ঈমানদারগণ। ঈমানদারের মাঝে তারাই মহান আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়,যারা অত্যাধিক তাকওয়াবান।তাই মসজিদের মোতাওয়ালি্ল হওয়া চাই তাকওয়াবান।
‪#‎মসজিদ‬ নির্মাণ ও উহার ফজিলত বিষয়ক হাদিস শরীফ এর দিকে লক্ষ্য করলে উহার গুরুত্ব আরো অনুধাবন করা সম্ভব।হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,من بنى لله مسجدا قدر مفحص قطاة بنى الله له بيتا فى الجنة যে ব্যক্তি আল্লাহ সন্তুষ্টির নিমিত্তে পাখির ডিম পাড়ার স্থান পরিমান মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। (আহমদ)
➲ হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম বলেছেন,যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ্ তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন।(বুখারী ও মুসলিম শরীফ)
➲ হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম বলেছেন,أحب البلاد إلى الله مساجدها، وأبغض البلاد إلى الله أسواقها
স্থান সমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রিয় স্থান হলো আল্লাহর নিকট মসজিদ সমূহ এবং সর্বাপেক্ষা ঘৃণ্য স্থান হলো বাজারসমূহ।(মুসলিম শরীফ/মিশকাত-৬৯৬)
➲ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করতে এবং মসজিদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ও উহাতে সুগন্ধি লাগাতে নির্দেশ দিয়েছেন।(আবু দাউদ,তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
এ সকল হাদিস ছাড়াও আরো বহু হাদিস শরীফে মসজিদ নির্মাণ ও উহার ফজিলত বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।মসজিদের আদব রক্ষা করা।মসজিদে দুনিয়াবী কথা না বলা।মসজিদ নিয়ে গর্ব না করা।এ সকল বিষয় মেনে চলে আমাদের জীবনে মসজিদের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও মসজিদের তত্ত্বাবধান যথাযথভাবে করার জন্য আল্লাহ্ তায়ালার সাহায্য কামনা করা কর্তব্য।
‪#‎সমাজে‬ মসজিদের ভুমিকা: পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা উত্তম স্থান মসজিদ।তাই মসজিদ আল্লাহর ঘর হিসেবে বিবেচিত।মসজিদে মুসলিমগণ দ্বীনের মূলভিত্তি সালাত দৈনিক পাঁচ বার আদায় করে থাকে।দ্বীনের মূল ভিত্তি আদায়ের স্থান বিধায় দ্বীনের অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদনেও মসজিদের ভুমিকা প্রাসঙ্গিক ও অনস্বীকার্য।মসজিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক দৈনন্দিন জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িত।এটি আমাদের মিলন মেলা,যেখানে আমরা প্রতিদিন পাঁচবার মিলিত হয়ে রবের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের পাশাপাশি আমাদের পারস্পরিক খোঁজ-খবর এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তোলি। ফলশ্রুতিতে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভালবাসার আবেশ ছড়িয়ে পড়ে সমাজে এবং একটি সুশীল সমাজ গড়ে উঠে।মসজিদের পানে যারা ছুটে যায় তাদের জন্য প্রতিটি কদমের বিনিময়ে উত্তম প্রতিদান,মর্যাদা ও গুনাহ মাফের ঘোষনা দিয়েছেন।عن بريدة أن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال من تطهر فى بيته ثم مضى الى بيت من بيوت الله يقضى فريضة من فرائض الله كانت خطواته إحداها تحط خطيئة والأخرى ترفع درجة. -أخرجه مسلم হযরত বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম বলেন:যে ব্যক্তি তার বাড়ীতে পবিত্রতার অর্জন করল অত:পর ফরজ ইবাদত আদায়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহর ঘরে (মসজিদে) গেল তার এক কদমের বিনিময়ে গুনাহ মার্জনা হবে এবং অপর কদমের বিনিময়ে মর্যদা বৃদ্ধি পাবে।(মুসলিম)
‪#‎ইসলামের‬ প্রাথমিক যুগে মসজিদের ভুমিকা: ইসলামের প্রাথমিক যুগে সমাজ পরিবর্তনে মসজিদের ভুমিকাই ছিল প্রধান।মসজিদ ছিল একই সাথে দাওয়াতী কাজের প্রাণকেন্দ্র এবং রাষ্ট্রীয় ভবন।দাওয়াতী কার্যক্রম এখান থেকেই পরিচালনা করা হত।বিভিন্ন বিষয়ের পরামর্শ ও সিন্ধান্ত গ্রহণ এখানেই সম্পাদন করা হত।বিভিন্ন দেশ ও এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধি ও মেহমানদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম মসজিদেই স্বাগত জানাতেন।সাহাবায়ে কিরামের সাথে মসজিদেই তিনি মিলিত হতেন এবং তাদের শিক্ষাদান করতেন।এক কথায়:মসজিদ ছিল তৎকালীন মুসলিম সমাজের যাবতীয় কাজের কেন্দ্রস্থল।
দৈনিক পাঁচবার মসজিদে যেতে সক্ষম সেই রবের সন্তুষ্টির জন্যই অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার মানসিকতা তার অন্তরে জাগ্রত হয়।আল্লাহ তা’য়ালা বলেন:
إن الصلاة تنهى عن الفحشاء والمنكر
নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।(সুরা আনকাবুত ৪৫)
ইসলামকে সৌন্দর্যমন্ডিত করতে আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর মনোনীত একমাত্র দীনের সঠিক বুঝ দান করুন এবং সেই দীনে আমাদেরকে পুরোপুরিভাবে দাখিল হওয়ার তৌফিক দিন।

ইসলামের দৃষ্টিতে শহীদ কারা।

ইসলামের দৃষ্টিতে শহীদ কারা।
================• ✏ইমরান বিন বদরী 
নাহমাদুহু ওয়ানুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম,আম্মা বা’দ। লেখাটি লিখতে গিয়ে একটু জটিলতা অনুভব করলাম। কারণ আমাদের সমাজে এর ব্যবহারটা এখন একপ্রকার অঘোষিত ভাইরাসে পরিণত হয়েছে।ফলে বর্তমান সমাজে যে হারে ব্যবহার হচ্ছে তাতে প্রকৃত শহীদের সংজ্ঞাটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে।আমি সেদিকে যাচ্ছিনা,আমার লেখা কেবল ইসলামের দৃষ্টিতে শহীদ কারা।আনন্দ আর উৎফুল্প মনে কারা সেই কাঙ্খিত সুধাপান করেছেন এবং তাঁদের অবস্থান কি সে সম্পর্কে ক্ষুদ্রজ্ঞানে যা বুঝলাম তাই আপনাদের পানে স্ববিনয়ে ক্ষমা চেয়ে আলোকপাত করছি।মরণশীল প্রত্যেক মানুষকে একদিন না একদিন মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।➲ আমার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কলামে বলেন- كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ
প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু।(সুরা-আল ইমরান-১৮৫)
মৃত্যু (Death) বলতে একটি জীবনের সমাপ্তিকে বুঝায়।যা আমাদের নিয়ে যায় অপেক্ষমান অনন্তকালে।আমি স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে আলোচনা করতে চাইনা।আমার লেখা অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে যার একটি অংশ শহীদি মৃত্যু।যে মৃত্যু স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক অনেক উত্তম।কেননা শহীদি মৃত্যুর জন্য যে আত্মত্যাগ, ধৈর্য, মনোবল ও আল্লাহভীতি দরকার হয় তা সবার পক্ষে অর্জন করা সম্ভবপর নয়।

#শহিদের পরিচয়:
ইসলামীক দৃষ্টিতে শহীদ শব্দটি খুবই মর্যাদাবান ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি শব্দ।
আরবিতে শহিদ শব্দটি ইসলাম পূর্বেও(شُهَدَاء) শোহাদা অর্থাত সাক্ষ্যদানকারী শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হত,যা আলাদা কোন মর্যাদা বহন করেনি।কিন্তু রহমাতুল্লীন আলামীনের আগমনের ফলে মহান আল্লাহতা'য়ালা আমার নবীর ভাষায় পবিত্র কুরআনকে অবতীর্ণ করে সেখানে শব্দটির ব্যবহারের ফলে যা ব্যাপকহারে মর্যাদাসম্পন্ন হয়ে উঠে।যার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও বৈশিষ্ট্য আল্লাহ তা'য়ালাই নির্ণয় করেদিয়েছেন।
➲ শহিদের পরিচয়ে আমার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কলামে বলেন-وَلِيَعْلَمَ اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ وَيَتَّخِذَ مِنكُمْ شُهَدَاء وَاللّهُ لاَ يُحِبُّ الظَّالِمِينَ ‘এভাবে আল্লাহ জানতে চান কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহিদ হিসেবে গ্রহণ করতে চান। আল্লাহ অত্যাচারীকে ভালোবাসেন না।’ (সূরা আলে ইমরান ১৪০)
উপরোক্ত আয়াতে স্পষ্ট যে শহীদি মর্যাদা হাছিলের জন্য ঈমানদার হওয়া চাই।কারণ আল্লাহপাক ঈমানদারদের থেকে শহিদ আশা করেছেন آمَنُواْ শব্দটি পার্থক্য করেদিয়েছেন যে শহিদ হওয়ার জন্য একত্ত্ববাদের উপর বিশ্বাস থাকতে হবে।এবং তাদের শহীদি যেন আল্লাহর দ্বীনের জন্য হয় অর্থাত আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ (জিহাদে ফি ছাবিলিল্লাহ) হয়।
➲ নবী করিম সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‘আমাদের মধ্যে যে শহিদ হলো সে জান্নাতে গেল’।ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমাদের শহিদ হলো জান্নাতি আর তাদের নিহতরা কি জাহান্নামি নয়?’ রাসূল সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম বললেন- ‘হ্যাঁ’।(সহীহ বুখারি)
➲ আমার আল্লাহ অন্যত্র বলেন- وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَٰكِنْ لَا تَشْعُرُونَ আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়,তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত,কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।(সূরা বাকারা-১৫৩)
➲ আমার আল্লাহ সূরা আলে ইমরানে আরো বলেন- وَلاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاء عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ ‘আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয় তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে কোরো না বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। (সূরা আলে ইমরান ১৬৯)
➲ আমার আল্লাহ আরো বলেন- وَمَنْ يُقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيُقْتَلْ أَوْ يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব।(সূরা নিসা-৭৪)
উপরোক্ত আয়াতে শহীদ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীর ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে।এভাবে সুরা মুহাম্মদে আরো কিছু আয়াত রয়েছে শহীদ সম্পর্কে।মূলতঃ শহিদ কোন দার্শনিকের দেয়া উপাধি নয় এটি ইসলামের প্রাথমিক যুগে কাফির তথা তৎকালিন আরবের লোকেরা আমার প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম একত্ত্ববাদের প্রচার করতে গেলে অর্থাৎ নবুয়তের দাওয়াত দিতে গেলে যারা অস্বীকার করে মুসলমানদের বিরোদ্ধে যুদ্ধ করার সময় যে সমস্ত বীর সাহাবায়ে কিরাম আজমাঈন আল্লাহর রাস্তায় নিজের মূল্যবান জীবনকে উৎসর্গ করেছেন তারাই শহিদ।যার ব্যাপকতাপায় গজওয়ায়ে বদর ও উহুদসহ অন্যান্য প্রসিদ্ধ যুদ্ধে।ইচ্ছে করলেই যে কেউ শহীদি মর্যাদা ও সম্মান লাভ করতে পারে না।এর সম্মান লাভ করতে হলে বিশেষভাবে যোগ্যতা অর্জন করা বাধ্যতামূলক।আর সে যোগ্যতা হচ্ছে, আল্লাহর একত্ববাদ ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে আমার রাসুল সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লামের দেখিয়ে দেয়া রাহে জীবন উৎসর্গ করা।
➲ আমার রাসুল সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-” من قاتل لتكون كلمة الله هي العليا فهو في سبيل الله “ যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার জন্য জিহাদ করল, সে প্রকৃত মুজাহিদ। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ)
➲ রাসুল সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন,যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণ করে অথবা নিহত হয়,সে ব্যক্তি জান্নাতী এবং শহীদ (ইবনু মাজাহ ২৯১০,মিশকাত৩৮১১)।
➲ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রাসুল সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন :শহীদগণের আত্মাসমূহ সবুজ পাখির পেটে অবস্থান করে। তাদের জন্য আল্লাহর আর্শে ঝুলন্ত রয়েছে প্রদীপসমূহ।এসব আত্মা বেহেশতে যেখানে ইচ্ছা সেখানে পরিভ্রমণ করতে থাকে এবং ঐসব প্রদীপে প্রত্যাবর্তন করে বিশ্রাম গ্রহণ করে। তাদের প্রতি লক্ষ্য করে তাদের প্রভু পরওয়ারদেগার বলেন :তোমাদের কি জিনিসের জন্য আগ্রহ হয়? তারা আরজ করে আমরা কিসের আগ্রহ করব, অথচ আমরা যেখানে ইচ্ছা বেহেশতের সেখানেই বেড়াতে পারি। আল্লাহ তাদের তিনবার এ ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন এবং তাদের জিজ্ঞাসা করেন যে, তারা কি চায়, তারা আগ্রহ ব্যক্ত করতে থাকে যে, তাদের আত্মা পুনরায় তাদের দেহে প্রত্যাবর্তিত করে দেয়া হোক। আল্লাহতা’লা যখন তাদের এ মনোভাবে বুঝতে পারেন, তখন পূর্বাবস্থায় তাদেরকে ছেড়ে দেন।(সহীহ মুসলিম)
➲ হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আল্লাহর কোন বান্দা এমতাবস্থায় মারা যায় যে, আল্লাহর কাছে তার সাওয়াব রয়েছে তাকে দুনিয়াতে এর সব কিছু দিলেও দুনিয়াতে ফিরে আস্তে আগ্রহী হবে না।একমাত্র শহীদ ব্যাতীত।সে শাহাদাতের ফযিলত দেখার কারণে আবার দুনিয়াতে ফিরে এসে আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার প্রতি আগ্রহী হবে।(সহীহ বুখারী/ইফা ২৬০৩)



❉ এ ছাড়া আরো কিছু মৃত্যুকেও প্রকৃত শহীদ নয় তবে কাছাকাছি মর্যাদা দান করা হয়েছে।যেমন -
أن جابر بن عتيك أخبره :أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال الشهداء سبعة سوى القتل في سبيل الله المطعون شهيد والغرق شهيد وصاحب ذات الجنب شهيد والمبطون شهيد والحرق شهيد والذي يموت تحت الهدم شهيد والمرأة تموت بجمع شهيد
হযরত জাবের বিন আতীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।রাসুল সল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও সাত প্রকার শহীদ রয়েছে।
১-মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী শহীদ।
২-পানিতে নিমজ্জিত শহীদ।
৩-শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত শহীদ।
৪-পেটের রোগ মৃত্যুবরণকারী শহীদ।
৫-আগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি শহীদ।
৬-যে ব্যক্তি ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মারা যায় সেও শহীদ।
৭-সন্তান প্রসব করতে মারা যাওয়া নারীও শহীদ। (মুয়াত্তা মালিক-৫৫৪/৮০২)

শহীদ ইসলামীক দৃষ্টিতে খুবই মর্যাদাবান ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি শব্দ।এটি ইসলামের নিজস্ব পরিভাষা।শহীদ মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথেই জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকে।শহীদ কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিভাষা নয়।তাই যত্রতত্র এটার ব্যবহার কিছুতেই কাম্য নয়।ইসলামে শহীদদের মৃত্যুরপর বিনিময় দেয়া হবে এবং তাদের মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে।কিন্তু আমাদের সমাজে যেহারে শহীদ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে তার কী কোন সঙ্গা বা প্রতিদানের কথা আদৌ কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে!প্রকৃত শহীদের সংজ্ঞাটা আসলে ধর্মযুদ্ধের সাথে সমপৃক্ত।যদিও আমাদের দেশে মাতৃভুমি রক্ষার্থে আত্নত্যাগকেও শহীদ বলা হয়। উইকিপিডিয়াতে ধর্ম আর দেশের জন্য জীবন দেয়াকে শহীদ বলা হয়েছে।শব্দটি বাংলায় অর্থাৎ আমাদের দেশে সম্মানী মৃত্যু হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে,যা ইসলামী সংজ্ঞানুযায়ী নয়।বাংলায় ক্ষুদিরামকেও শহীদ বলা হয়, এভাবে এদেশের বিপ্লবীদের শহীদ উপাধি দেয়া হয়েছে।৫২এর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১এর স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তারা শহীদ হিসেবে গন্য হয়েছেন যা একটা সম্মানী মৃত্যু হিসেবে পরিগনিত হয়েছে।অর্থাৎ ন্যায়ের পক্ষকে আমাদের দেশে শহীদ বলা হয়। মোটকথা,শহীদ শব্দটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে এখন আর ব্যবহার হচ্ছেনা। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে এদেশে সবাইকে শহীদ বলা হয়।পরিশেষে বলতে চাই শহীদ বলে উল্লেখকরা আর মহান রব্বুল আলামীনের কাছে তার প্রতিদান ভোগ করা একনয়।

➲ হযরত সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আমি আজ রাতে (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম যে,দু’ব্যাক্তি আমার নিকট এল এবং আমাকে নিয়ে একটি গাছে উঠলো।তারপর আমাকে এমন সুন্দর উৎকৃষ্ট একটি ঘরে প্রবেশ করিয়ে দিল; এর আগে আমি কখনো এর চাইতে সুন্দর ঘর দেখিনি। সে দু’ব্যাক্তি আমাকে বলল,এই ঘরটি হচ্ছে শহীদদের ঘর।(সহীহ বুখারী/ইফাঃ)
আমি চেষ্টা করেছি মাত্র আর সেই চেষ্টা সার্থক হবে তখনি যখন আপনার লেখাটি বুঝতে সহজ হবে।

মা'তুমিই অতুলনীয়।

মা'তুমিই অতুলনীয়।
=======• ✏ইমরান বিন বদরী 
মা,
শব্দটি অতি ছোট কিন্তু মায়ের ভালবাসা সীমাহীন।অতি মধুর শব্দটি মুখে আন্তেই পরম শান্তি অনুভব করি।সুখে,দুঃখে,হাসি,কান্নাতে সবকিছুতেই মা’।মায়ের আঁচলে লুকায়িত রয়েছে অগাধ ভালবাসা।ভূমিষ্ট হওয়ার পর মাটি স্পর্শ করার আগেই যার স্পর্শ তিনি আমাদের গর্ভধারীনী ।
মা,💛 তোমায় নিয়ে হাজারো সন্তান ভাবনার জগতে তোমার অকৃতিম ভালবাসার সাগরে ঝাপ দিয়ে যায়।তোমাকে হারিয়ে স্বয়নে স্বপনে নিশীতে জাগরণে হাজারো চিঠি লিখে যায় । তোমার দূরত্বে বিদেশ মাটিতে চাপা কান্নায় ভালবাসা বঞ্চিত হয়ে দিনাতিপাত করে যায় ।তোমার তুলনায় তুমিই অতুলনীয়।সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টিতে তুমিই সবচেয়ে বড় উপহার।নিরাপত্তার বলয়ে কেবল তুমিই হতে পার নিশ্চিত নিরাপত্তার সর্বোত্কৃষ্ঠ উপায়।তোমার স্পর্শ পেয়ে আমরন তোমার ভালবাসার চাদরের নিচে বেঁচে থাকতে চাই।তুমি বিহনে শুন্য হৃদয়ে মনের তুলিতে রাঙ্গিয়ে যায় তোমার ছবি।মা' তোমারি পদতলে মোরা স্বর্গ তালাশ করি ।পৃথিবীর বুকে এই ভালবাসা কখনো খন্ডন করা যায় না ।জীবনে চলার পথে প্রত্যেকটি মুহূর্তে সন্তানের সাথী হয় এই মায়ের নি:স্বার্থ ভালবাসা আর অন্তরের গভীর থেকে আসা দোয়া ।স্বার্থপর এই পৃথিবীতে সময়ের সাথে সাথে সবাই স্বার্থপর হয়ে যায় ।কিন্তু মায়ের ভালবাসা এতই নিখুত যে, এখানে স্বার্থপরতার একটি ধূলি কনাও পাওয়া যায় না ।অকৃত্রিম এই ভালবাসার বন্ধনে সারা জীবন নিজের সন্তানকে আগলে রাখতে চান “মা” ।

প্রয়োজনীয় কিছু হাদিস শরীফ

 প্রয়োজনীয় কিছু হাদিস শরীফ
==============• ✏ইমরান বিন বদরী 
নাহমাদুহু ওয়ানুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম,আম্মা বা’দ।
একজন মুসলমানের প্রাত্যহিক জীবনে কিছু প্রয়োজনীয় হাদীস শরীফ যা আমলে আমাদের জীবনের অনেকটা পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।আশাকরি নিজ দায়িত্বে অন্য একজন মুসলমান ভাই পড়ে আমল করার জন্য শেয়ার করবেন।হাদিস শরীফ গুলি ইমাম ইসমাঈল বুখারী (রহ:) উনার বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ সহীহ বুখারীতে উল্লেখ করেছেন।


❋ হযরত আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেনঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার দু-জন প্রতিবেশী আছে। আমি তাদের কার নিকট হাদিয়া পাঠাব? তিনি বললেনঃ যার দরজা (ঘর) তোমার নিকটবর্তী, তার কাছে (পাঠাবে)।

❋ হযরত জাবির ইবনুূু আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত।তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক সৎ কাজই সাদাকা।

❋ হযরত আনাস ইবনুূু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। একদা এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলো। লোকেরা উঠে (তাকে মারার জন্য) তার দিকে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার পেশাব করা বন্ধ করো না। তারপর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং পানি পেশাবের উপর ঢেলে দেয়া হলো

❋ হযরত ইবনুূু হাতিম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত। তিনি বলেন-নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেচে থাক এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও তা হলে মধুর ভাষা বিনিময়ে।

❋ হযরত আবদুল্লাহ ইবনুূু আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক উত্তম ঐ ব্যাক্তি, যে স্বভাবে সর্বোত্তম।

❋ হযরত নুমান ইবনুূু বশীর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি মু-মিনদের পারস্পরিক দয়া ভালবাসা ও সহানূভূতি প্রদর্শনে একটি দেহের ন্যায় দেখতে পাবে।যখন দেহের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয় তখন শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ গ্রহণ করে

❋ হযরত আনাস ইবনুূু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন-নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলমান যদি কোন গাছ লাগায়,তা থেকে কোন মানুষ বা জানোয়ার যদি কিছু খায় তবে তা তার জন্য সাদাকা হিসেবে গণ্য হবে।

❋ হযরত জারীর ইবনুূু আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যাক্তি (সৃষ্টির প্রতি) দয়া করে না, (স্রষ্টার পক্ষ থেকে) তার প্রতি দয়া করা হবে না

❋ হযরত আবূ সুরাইয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বলছিলেনঃ আল্লাহর কসম! সে ব্যাক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে লোক মুমিন নয়! আল্লাহর কসম। সে ব্যাক্তি মুঁমিন নয়। জিজ্ঞাসা করা হলঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ কে সে লোক? তিনি বললেনঃ যে লোকের প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকে না।

❋ হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এমন কোন জিনিসই চাওয়া হয় নি,যার উত্তরে তিনি না- বলেছেন।

❋ হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি দশ বছর পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমত করেছি।কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উঃ শব্দ বলেন নি। একথা জিজ্ঞাসা করেননি তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না?

❋ হযরত আবদুল্লাহ ইবনুূু যামআ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের বাযূ নির্গমনে কাউকে হাসতে নিষেধ করেছেন।

❋ হযরত আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন সে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানের গালি দেয়া ফাসিকী (কবীরা গুনাহ) এবং এক অন্যের সাথে মারামারি করা কুফরী।

❋ হযরত হুযায়ফা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বললেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

❋ হযরত আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কিয়ামতের দিন তুমি আল্লাহর নিকট ঐ ব্যাক্তিকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট পাবে যে দুমুখো। সে এদের সামনে একরুপ নিয়ে আসতো আর ওদের কাছে অন্য রুপে ধরা দিত।

❋ হযরত আনাস ইবনুূু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা একে অন্যের প্রতি বিদ্যেষভাব পোষন করো না, পরস্পর হিংসা করো না পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না।তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো।কোন মুসলমানের জন্য তিন দিনের বেশী তার ভাইকে পরিত্যাগ করে থাকা জায়িয নয়।

❋ হযরত আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা অনুমান থেকে বেচে থেকেো। কারণ অনুমান বড় মিথ্যা ব্যাপার। আর কারো দোষ অনুসন্ধান করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, একে অন্যকে ধোঁকা দিও না, আর পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্ব্যেষভাব পোষণ করো নাএবং পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো।

❋ হজরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত,নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে শয্যা গ্রহণের সময় তালুদ্বয় একত্রিত করে তাতে ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা আল-ইখলাস) এবং ‘ক্বুল ‘আউযুবি রব্বিল ফালাক্ব’ (সূরা আল-ফালাক) এবং ‘ক্বুল আ’উযু বিরব্বিন্ নাস’ (সূরা আন-নাস) পড়ে ফুঁ দিতেন। অতঃপর হাতদ্বয় দ্বারা শরীরের যতদূর পর্যন্ত বুলানো সম্ভব হত, ততদূর পর্যন্ত বুলিয়ে নিতেন।স্বীয় মাথা, চেহারা ও শরীরের সামনের দিক থেকে আরম্ভ করতেন।এভাবে তিনি তিন বার করতেন।”