══ ✏ইমরান বিন বদরী
সূরা ফাতিহা (سورة الفاتحة )পবিত্র কালামে পাকের সর্বপ্রথম এবং মর্যাদাবান সূরা।এটি হিজরতের পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিলো।এটি সর্ব প্রথম পূর্ণাঙ্গ সুরা।সূরাটির ফজিলত অপরিসীম।অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ সূরাটিতে ৭টি আয়াত রয়েছে।সূরা ফাতিহার সর্বাধিক পরিচিত নাম সূরাতুল ফাতিহা।ফাতিহা' শব্দটি ফাতহুন থেকে যার অর্থ উন্মুক্তকরণ।এ ছাড়াও সূরাটির বৈশিষ্ট্যে ভাবধারা ও বিষয়বস্তুর প্রতি লক্ষ রেখে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়েছে।যেমনঃ উমমূল কিতাব/উম্মুল কুরআন,আস সাবউল মাসানী, আস শিফা,আল হামদ,আল কাফিয়া,আদ্ দুয়া,সূরাতুস সালাত বা নামাযের সূরা ইত্যাদি।
নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,সুরা ফাতিহা না পড়লে কোন ব্যক্তির নামায পূর্ণাঙ্গ হবে না।(বুখারী ও মুসলিম) এ সূরাটিকে পবিত্র কুরআনে কারীমের মূল হিসেবে গন্যকরা যায় কারণ এর তরজুমায় স্পষ্ট যে মহান আল্লাহপাকের প্রসংশার সাথে তার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে পরকালের বিচারকে মেনে নিয়ে ফরিয়াদ করা সেই সরল সঠিক পথের অর্থাৎ সিরাতুল মুস্তাকিমের জন্য যে পথে গিয়েছেন নাজাত প্রাপ্তরা এবং সকল প্রকার গোমরাহী থেকে মুক্ত রাখার প্রার্থনা।এটাইতো একজন ঈমানদারের চাওয়া।মূলত এটি একটি প্রার্থনা বিশেষ সূরা, এতে উলুহিয়াত (আল্লাহর ইলাহ হওয়া) রবুবিয়াত (আল্লাহর রব হওয়া) এর আলোচনা করা হয়েছে।সৃরাটির একের পর এক গুরুত্ব লিখতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন।আসলে এ সূরাটি হচ্ছে একটি দোয়া।যে কোন ব্যক্তি এ পবিত্র কালামে পাক পড়তে শুরু করলে আল্লাহ প্রথমে তাকে যেন এ দোয়াটি শিখিয়ে দেন।
হজরত সাঈদ ইবনু মুআল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন,তখন রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাক দিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন না।অতপর ছালাত শেষে এসে বললাম,হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ছালাত আদায় করছিলাম।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,আল্লাহ কি বলেননি,হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও,যখন তোমাদেরকে ডাকা হয়?’(সূরা আনফাল : আয়াত ২৪)।অতঃপর আমাকে বললেন, মসজিদ থেকে তোমার বের হওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব।অতপর তিনি আমার হাত ধরলেন।যখন তিনি মসজিদ থেকে বের হতে চাইলেন, তখন আমি উনাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম,আপনি কি আমাকে বলেননি যে,তোমাকে আমি কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ এটিই সাবউল মাছানী এবং কুরআনুল আজিম যা আমাকে দেয়া হয়েছে’।(আবু দাউদ,মুসনাদে আহমদ)
ইমাম তিরমিযী (রহ:) হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবীয়ে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন,সূরা ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ঔষধ বিশেষ। মূলত সূরা ফাতিহা হল এমন এক মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যা শুধু উম্মতে মুহাম্মদীকে দান করা হয়েছে।
হযরত আবূ সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন।তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাদের মেহমান হতে চাইলেন।কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার (আরোগ্যর) জন্য সব ধরনের চেষ্টা করল।কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাদের কেউ বলল,এ কাফেলা যারা এখানে অবতরন করেছে তাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত।সম্ভবত,তাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে।ওরা তাদের নিকট গেল এবং বলল,হে যাত্রীদল।আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না।তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি? তাদের (সাহাবীদের) একজন বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করতে পারি।আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি।কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করবো না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল। তারপর তিনি গিয়ে আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে (এমন ভাবে নিরাময় হল) যেন বন্ধন থেকে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না।(বর্ণনাকারী বলেন)তারপর তারা তাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল।সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়- ফুঁক করেছিলেন, তিনি বললেন এটা করবো না, যে পর্যন্ত না আমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কি হুকুম দেন। তারা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি (নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দূয়া? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন। (সহীহ বুখারী)
🔊 আল্লাহ যেন আমাদেরকে সর্বাধিক পরিচিত মর্যাদাপূর্ণ সূরা ফাতিহা আমল করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তওফীক দান করুন।আমিন,ছুম্মা আমিন।
সূরা ফাতিহা (سورة الفاتحة )পবিত্র কালামে পাকের সর্বপ্রথম এবং মর্যাদাবান সূরা।এটি হিজরতের পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিলো।এটি সর্ব প্রথম পূর্ণাঙ্গ সুরা।সূরাটির ফজিলত অপরিসীম।অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ সূরাটিতে ৭টি আয়াত রয়েছে।সূরা ফাতিহার সর্বাধিক পরিচিত নাম সূরাতুল ফাতিহা।ফাতিহা' শব্দটি ফাতহুন থেকে যার অর্থ উন্মুক্তকরণ।এ ছাড়াও সূরাটির বৈশিষ্ট্যে ভাবধারা ও বিষয়বস্তুর প্রতি লক্ষ রেখে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়েছে।যেমনঃ উমমূল কিতাব/উম্মুল কুরআন,আস সাবউল মাসানী, আস শিফা,আল হামদ,আল কাফিয়া,আদ্ দুয়া,সূরাতুস সালাত বা নামাযের সূরা ইত্যাদি।
নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,সুরা ফাতিহা না পড়লে কোন ব্যক্তির নামায পূর্ণাঙ্গ হবে না।(বুখারী ও মুসলিম) এ সূরাটিকে পবিত্র কুরআনে কারীমের মূল হিসেবে গন্যকরা যায় কারণ এর তরজুমায় স্পষ্ট যে মহান আল্লাহপাকের প্রসংশার সাথে তার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে পরকালের বিচারকে মেনে নিয়ে ফরিয়াদ করা সেই সরল সঠিক পথের অর্থাৎ সিরাতুল মুস্তাকিমের জন্য যে পথে গিয়েছেন নাজাত প্রাপ্তরা এবং সকল প্রকার গোমরাহী থেকে মুক্ত রাখার প্রার্থনা।এটাইতো একজন ঈমানদারের চাওয়া।মূলত এটি একটি প্রার্থনা বিশেষ সূরা, এতে উলুহিয়াত (আল্লাহর ইলাহ হওয়া) রবুবিয়াত (আল্লাহর রব হওয়া) এর আলোচনা করা হয়েছে।সৃরাটির একের পর এক গুরুত্ব লিখতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন।আসলে এ সূরাটি হচ্ছে একটি দোয়া।যে কোন ব্যক্তি এ পবিত্র কালামে পাক পড়তে শুরু করলে আল্লাহ প্রথমে তাকে যেন এ দোয়াটি শিখিয়ে দেন।
হজরত সাঈদ ইবনু মুআল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন,তখন রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাক দিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন না।অতপর ছালাত শেষে এসে বললাম,হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ছালাত আদায় করছিলাম।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,আল্লাহ কি বলেননি,হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও,যখন তোমাদেরকে ডাকা হয়?’(সূরা আনফাল : আয়াত ২৪)।অতঃপর আমাকে বললেন, মসজিদ থেকে তোমার বের হওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব।অতপর তিনি আমার হাত ধরলেন।যখন তিনি মসজিদ থেকে বের হতে চাইলেন, তখন আমি উনাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম,আপনি কি আমাকে বলেননি যে,তোমাকে আমি কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ এটিই সাবউল মাছানী এবং কুরআনুল আজিম যা আমাকে দেয়া হয়েছে’।(আবু দাউদ,মুসনাদে আহমদ)
ইমাম তিরমিযী (রহ:) হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবীয়ে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন,সূরা ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ঔষধ বিশেষ। মূলত সূরা ফাতিহা হল এমন এক মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যা শুধু উম্মতে মুহাম্মদীকে দান করা হয়েছে।
হযরত আবূ সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন।তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাদের মেহমান হতে চাইলেন।কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার (আরোগ্যর) জন্য সব ধরনের চেষ্টা করল।কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাদের কেউ বলল,এ কাফেলা যারা এখানে অবতরন করেছে তাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত।সম্ভবত,তাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে।ওরা তাদের নিকট গেল এবং বলল,হে যাত্রীদল।আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না।তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি? তাদের (সাহাবীদের) একজন বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করতে পারি।আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি।কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করবো না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল। তারপর তিনি গিয়ে আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে (এমন ভাবে নিরাময় হল) যেন বন্ধন থেকে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না।(বর্ণনাকারী বলেন)তারপর তারা তাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল।সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়- ফুঁক করেছিলেন, তিনি বললেন এটা করবো না, যে পর্যন্ত না আমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কি হুকুম দেন। তারা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি (নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দূয়া? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন। (সহীহ বুখারী)
🔊 আল্লাহ যেন আমাদেরকে সর্বাধিক পরিচিত মর্যাদাপূর্ণ সূরা ফাতিহা আমল করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তওফীক দান করুন।আমিন,ছুম্মা আমিন।