বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬

সূরা ফাতিহার ফজিলত

══ ✏ইমরান বিন বদরী
সূরা ফাতিহা (سورة الفاتحة )পবিত্র কালামে পাকের সর্বপ্রথম এবং মর্যাদাবান সূরা।এটি হিজরতের পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিলো।এটি সর্ব প্রথম পূর্ণাঙ্গ সুরা।সূরাটির ফজিলত অপরিসীম।অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ সূরাটিতে ৭টি আয়াত রয়েছে।সূরা ফাতিহার সর্বাধিক পরিচিত নাম সূরাতুল ফাতিহা।ফাতিহা' শব্দটি ফাতহুন থেকে যার অর্থ উন্মুক্তকরণ।এ ছাড়াও সূরাটির বৈশিষ্ট্যে ভাবধারা ও বিষয়বস্তুর প্রতি লক্ষ রেখে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়েছে।যেমনঃ উমমূল কিতাব/উম্মুল কুরআন,আস সাবউল মাসানী, আস শিফা,আল হামদ,আল কাফিয়া,আদ্ দুয়া,সূরাতুস সালাত বা নামাযের সূরা ইত্যাদি।

📖 নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,সুরা ফাতিহা না পড়লে কোন ব্যক্তির নামায পূর্ণাঙ্গ হবে না।(বুখারী ও মুসলিম) এ সূরাটিকে পবিত্র কুরআনে কারীমের মূল হিসেবে গন্যকরা যায় কারণ এর তরজুমায় স্পষ্ট যে মহান আল্লাহপাকের প্রসংশার সাথে তার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে পরকালের বিচারকে মেনে নিয়ে ফরিয়াদ করা সেই সরল সঠিক পথের অর্থাৎ সিরাতুল মুস্তাকিমের জন্য যে পথে গিয়েছেন নাজাত প্রাপ্তরা এবং সকল প্রকার গোমরাহী থেকে মুক্ত রাখার প্রার্থনা।এটাইতো একজন ঈমানদারের চাওয়া।মূলত এটি একটি প্রার্থনা বিশেষ সূরা, এতে উলুহিয়াত (আল্লাহর ইলাহ হওয়া) রবুবিয়াত (আল্লাহর রব হওয়া) এর আলোচনা করা হয়েছে।সৃরাটির একের পর এক গুরুত্ব লিখতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন।আসলে এ সূরাটি হচ্ছে একটি দোয়া।যে কোন ব্যক্তি এ পবিত্র কালামে পাক পড়তে শুরু করলে আল্লাহ প্রথমে তাকে যেন এ দোয়াটি শিখিয়ে দেন।
📖 হজরত সাঈদ ইবনু মুআল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন,তখন রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাক দিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন না।অতপর ছালাত শেষে এসে বললাম,হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ছালাত আদায় করছিলাম।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,আল্লাহ কি বলেননি,হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও,যখন তোমাদেরকে ডাকা হয়?’(সূরা আনফাল : আয়াত ২৪)।অতঃপর আমাকে বললেন, মসজিদ থেকে তোমার বের হওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব।অতপর তিনি আমার হাত ধরলেন।যখন তিনি মসজিদ থেকে বের হতে চাইলেন, তখন আমি উনাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম,আপনি কি আমাকে বলেননি যে,তোমাকে আমি কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ এটিই সাবউল মাছানী এবং কুরআনুল আজিম যা আমাকে দেয়া হয়েছে’।(আবু দাউদ,মুসনাদে আহমদ)
📖 ইমাম তিরমিযী (রহ:) হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবীয়ে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন,সূরা ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ঔষধ বিশেষ। মূলত সূরা ফাতিহা হল এমন এক মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যা শুধু উম্মতে মুহাম্মদীকে দান করা হয়েছে।
📖 হযরত আবূ সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন।তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাদের মেহমান হতে চাইলেন।কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার (আরোগ্যর) জন্য সব ধরনের চেষ্টা করল।কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাদের কেউ বলল,এ কাফেলা যারা এখানে অবতরন করেছে তাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত।সম্ভবত,তাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে।ওরা তাদের নিকট গেল এবং বলল,হে যাত্রীদল।আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না।তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি? তাদের (সাহাবীদের) একজন বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করতে পারি।আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি।কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করবো না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল। তারপর তিনি গিয়ে আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে (এমন ভাবে নিরাময় হল) যেন বন্ধন থেকে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না।(বর্ণনাকারী বলেন)তারপর তারা তাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল।সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়- ফুঁক করেছিলেন, তিনি বললেন এটা করবো না, যে পর্যন্ত না আমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কি হুকুম দেন। তারা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি (নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দূয়া? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন। (সহীহ বুখারী)
🔊 আল্লাহ যেন আমাদেরকে সর্বাধিক পরিচিত মর্যাদাপূর্ণ সূরা ফাতিহা আমল করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তওফীক দান করুন।আমিন,ছুম্মা আমিন।

মেঘহীন আকাশে হঠাৎ বৃষ্টি !

✏ইমরান বিন বদরী।
তখন মদিনায় বৃষ্টি হচ্ছিলনা বলে চারিদিকে শুরু হয় প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ।সেদিন ছিল জুমার দিন।আমার দয়াল নবী মানব মুক্তির দিশারী মসজিদে নববীতে খোতবা দেয়ার প্রাক্কালের এই ঘটনা।যথারীতি নবী প্রেমে সিক্ত হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণিত আরেকটি মুজেজা এ রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম।সেদিন আরেকবার প্রমাণীত হয়েছিল রহমাতুল্লিল আলামীনের দোয়া করার সাথে সাথে মহান আল্লাহর দরবারে তা কবুল আর মন্জুর হয়ে যায়।সুবহান'আল্লাহ!

📖 আসুন মূল হাদিস শরীফটি পড়ি।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ أَصَابَتِ النَّاسَ سَنَةٌ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَبَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ قَامَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكَ الْمَالُ وَجَاعَ الْعِيَالُ، فَادْعُ اللَّهَ لَنَا. فَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَمَا نَرَى فِي السَّمَاءِ قَزَعَةً، فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا وَضَعَهَا حَتَّى ثَارَ السَّحَابُ أَمْثَالَ الْجِبَالِ، ثُمَّ لَمْ يَنْزِلْ عَنْ مِنْبَرِهِ حَتَّى رَأَيْتُ الْمَطَرَ يَتَحَادَرُ عَلَى لِحْيَتِهِ صلى الله عليه وسلم فَمُطِرْنَا يَوْمَنَا ذَلِكَ، وَمِنَ الْغَدِ، وَبَعْدَ الْغَدِ وَالَّذِي يَلِيهِ، حَتَّى الْجُمُعَةِ الأُخْرَى، وَقَامَ ذَلِكَ الأَعْرَابِيُّ ـ أَوْ قَالَ غَيْرُهُ ـ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، تَهَدَّمَ الْبِنَاءُ وَغَرِقَ الْمَالُ، فَادْعُ اللَّهَ لَنَا. فَرَفَعَ يَدَيْهِ، فَقَالَ " اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا، وَلاَ عَلَيْنَا ". فَمَا يُشِيرُ بِيَدِهِ إِلَى نَاحِيَةٍ مِنَ السَّحَابِ إِلاَّ انْفَرَجَتْ، وَصَارَتِ الْمَدِينَةُ مِثْلَ الْجَوْبَةِ، وَسَالَ الْوَادِي قَنَاةُ شَهْرًا، وَلَمْ يَجِئْ أَحَدٌ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلاَّ حَدَّثَ بِالْجَوْدِ.
আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে একবার দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সে সময় এক জুমু'আর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক বেদুঈন উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (বৃষ্টির অভাবে) সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।পরিবার পরিজনও অনাহারে রয়েছে। তাই আপনি আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য দু’আ করুন। তিনি দু’হাত তুললেন। সে সময় আমরা আকাশে এক খন্ড মেঘও দেখিনি।যার হাতে আমার প্রাণ,তাঁর শপথ (করে বলছি)! (দু’আ শেষে) তিনি দু’হাত (এখনও) নামান নি, এমন সময় পাহাড়ের ন্যায় মেঘের বিরাট বিরাট খন্ড উঠে আসল। তারপর তিনি মিম্বর থেকে অবতরণ করেন নাই, এমন সময় দেখতে পেলাম তাঁর পবিত্র দাঁড়ির উপর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছে। সে দিন আমাদের এখানে বৃষ্টি হল।এর পরে ক্রমাগত দু’দিন এবং পরবর্তী জুমু'আ পর্যন্ত প্রত্যেক দিন।
(পরবর্তী জুমু'আর দিন) সে বেদুইন অথবা অন্য কেউ উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (বৃষ্টির কারণে) এখন আমাদের বাড়ী ঘর ধ্বসে পড়ছে,সম্পদ ডুবে যাচ্ছে।তাই আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ করুন।তখন তিনি দু’হাত তুললেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায় (বৃষ্টি দাও),আমাদের উপর নয়।(দু’আর সময়) তিনি মেঘের এক একটি খন্ডের দিকে ইঙ্গিত করছিলেন, আর সেখান-কার মেঘ কেটে যাচ্ছিল।এর ফলে চতুর্দিকে মেঘ পরিবেষ্টিত অবস্থায় ঢালের ন্যায় মদিনার আকশ মেঘমুক্ত হয়ে গেল এবং কানাত উপত্যকার পানি এক মাস ধরে প্রবাহিত হতে লাগল,তখন (মদিনার) চতুরপার্শের যে কোন অঞ্চল হতে যে কেউ এসেছে,সে এ মুষলধারে বৃষ্টির কথা আলোচনা করেছে।(সহীহ বুখারী/ইফাঃ)


🔊 শুধু তাইনয় হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু অন্য এক রেওয়ায়েতে বলেন, أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ كَانَ إِذَا قَحَطُوا اسْتَسْقَى بِالْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا فَتَسْقِينَا وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَا. قَالَ فَيُسْقَوْنَ. উমর ইবনু খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অনাবৃষ্টির সময় আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব এর উসিলা দিয়ে বৃষ্টির জন্য দু’আ করতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ! (প্রথমে) আমরা আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উসিলা দিয়ে দোয়া করতাম এবং আপনি বৃষ্টি দান করতেন।এখন আমরা আমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচার উসিলা দিয়ে দু’আ করছি, আপনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন।বর্ণনাকারী বলেন,দু’আর সাথে সাথেই বৃষ্টি বর্ষিত হতো।(সহীহ বুখারী)
✔এতে স্পষ্ট যে উছিলা বা মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করা যায় এবং তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী,বিশেষ করে আমার নবী সল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর উছিলায়। যে নবীর নামে দরুদ পড়লে দোয়া কবুল হয় বেশী।আল্লাহপাক আমাদের রহমাতুল্লীল আলামীনের শান মান বুঝার তাওফিক দান করুক।আমীন।

দোয়া

📖 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম--➲
দোয়া শব্দটির আক্ষরিক অর্থ 'ডাকা' যা একটি পদ্ধতি-সিদ্ধ মিনতি প্রক্রিয়া।আল্লাহপাক তার কুরআনে করীমের সূরা আল-মু’মিনে বলেছেন, ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ তোমরা আমাকে ডাক,আমি সাড়া দেব।(আয়াত ৬০)।পবিত্র কুরআনে করীমে উল্লেখিত ফজিলতপূর্ণ কিছু দোয়া (دُعَاء) একত্রে করলাম।আমি মনেকরি একজন মুসলমান হিসেবে মহান আল্লাহপাকের নৈকট্য লাভের জন্য দোয়াগুলি নিয়মিত পাঠকরা প্রয়োজন।বর্তমানে মুনাজাতে দোয়া করা'ত দুরে থাক, মুনাজাত'কে ফতোয়ার কালো থাবা থেকেও রেহাই দিচ্ছেনা।আর সাম্প্রতিক কিছু মুনাজাতকারীকে দেখা যায় আরবীতে রচনা করা বিভিন্ন মুনাজাত করতে,হ্যাঁ বর্তমান সময়ানুযায়ী প্রেক্ষাপটে মুনাজাত করলেও কুরআনে করীমে শিখিয়ে দেয়া মুনাজাতের কিন্তু বিকল্প নেই।সুতরাং আমাদের বিশেষ করে যারা সম্মানীত ইমামগন আছেন আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ থাকবে মুনাজাতের মাঝে প্রেক্ষাপট দেশ ও দশের সাথে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন আয়াতে কুরআনকে উল্লেখ করতে।দোয়া কামনায় অধম ✏ইমরান বিন বদরী।

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا ۖ إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
❇ হে আমাদের রব, আমাদের পক্ষ থেকে কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’।(আল-বাকারা ১২৭)
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُسْلِمَةً لَكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَا ۖ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
❇ হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।(আল-বাকারা ১২৮)
إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
❇ (হে আমাদের রব) নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী,প্রজ্ঞাময়’।(আল-বাকারা ১২৯)
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
❇ হে আমাদের রব,আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন।আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন।(আল-বাকারা ২০১)
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
❇ হে আমাদের রব,আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন, আমাদের পা স্থির রাখুন এবং আমাদেরকে কাফের জাতির বিরুদ্ধে সাহায্য করুন’।(আল-বাকারা ২৫০)
رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
❇ হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব, আমাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আর আমাদের উপর দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।(আল-বাকারা ২৮৬)
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
❇ হে আমাদের রব,আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।(আলে-ইমরান ৮)
رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لَا رَيْبَ فِيهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ
❇ হে আমাদের রব,নিশ্চয় আপনি মানুষকে সমবেত করবেন এমন একদিন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।(আলে-ইমরান ৯)
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
❇ হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ঈমান আনলাম। অতএব, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’।(আলে-ইমরান ১৬)
رَبَّنَا آمَنَّا بِمَا أَنْزَلْتَ وَاتَّبَعْنَا الرَّسُولَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ
❇ হে আমাদের রব, আপনি যা নাযিল করেছেন তার প্রতি আমরা ঈমান এনেছি এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করেছি।অতএব, আমাদেরকে সাক্ষ্যদাতাদের তালিকাভুক্ত করুন’।(আলে-ইমরান ৫৩)
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
❇ হে আমাদের রব,আমাদের পাপ ও আমাদের কর্মে আমাদের সীমালঙঘন ক্ষমা করুন এবং অবিচল রাখুন আমাদের পাসমূহকে, আর কাফির কওমের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন’।(আলে-ইমরান ১৪৭)
رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ
❇ হে আমাদের রব আমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং বিদূরিত করুন আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি,আর আমাদেরকে মৃত্যু দিন নেককারদের সাথে’।(আলে-ইমরান ১৯৩)
رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَنَا عَلَىٰ رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۗ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ
❇ হে আমাদের রব, আর আপনি আমাদেরকে তা প্রদান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে।আর কিয়ামতের দিনে আপনি আমাদেরকে অপমান করবেন না।নিশ্চয় আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না।(আলে-ইমরান ১৯৪)
رَبَّنَا آمَنَّا فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ
❇ হে আমাদের রব,আমরা ঈমান এনেছি।সুতরাং আপনি আমাদেরকে সাক্ষ্য দানকারীদের সঙ্গে লিপিবদ্ধ করুন।(আল-মায়েদা ৮৩)
وَارْزُقْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
❇ (হে আমাদের রব) আর আমাদেরকে রিয্ক দান করুন,আপনিই শ্রেষ্ঠ রিয্কদাতা’।(আল-মায়েদা ১১৪)
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
❇ হে আমাদের রব, আমরা নিজদের উপর যুলম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব’।(আল-আ'রাফ ২৩)
رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ 
❇ হে আমাদের রব,আমাদেরকে যালিম কওমের অন্তর্ভুক্ত করবেন না’।(আ'রাফ ৪৭)
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
❇ হে আমাদের রব,আমাদেরকে পরিপূর্ণ ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে মৃত্যু দান করুন।(আল-আ'রাফ ১২৬)
رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
❇ হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে যালিম কওমের ফিতনার পাত্র বানাবেন না’।(ইউনুস ৮৫)
رَبَّنَا إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِي وَمَا نُعْلِنُ ۗ وَمَا يَخْفَىٰ عَلَى اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ
❇ হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি জানেন,যা আমরা গোপন করি এবং যা প্রকাশ করি,আর কোন কিছু আল্লাহর নিকট গোপন নেই,না যমীনে না আসমানে।(ইবরাহীম ৩৮)
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلَاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي ۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ
❇ হে আমার রব,আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দো‘আ কবূল করুন’।(ইবরাহীম ৪০)
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
❇ হে আমাদের রব,যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দিবেন’।(ইবরাহীম ৪১)
رَبَّنَا آتِنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً
❇ হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার পক্ষ থেকে রহমত দিন (আল-কাহফ ১০)
رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
❇ হে আমাদের রব, আমরা ঈমান এনেছি, অতএব আমাদেরকে ক্ষমা ও দয়া করুন, আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’(আল-মুমিনুন ১০৯)
رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ ۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
❇ হে আমাদের রব,আপনি আমাদের থেকে জাহান্নামের আযাব ফিরিয়ে নাও। নিশ্চয় এর আযাব হল অবিচ্ছিন্ন’।(আল-ফুরকান ৬৫)
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
❇ হে আমাদের রব,আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’।(আল-ফুরকান ৭৪)
رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ
❇ হে আমাদের রব, আপনি রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সব কিছুকে পরিব্যপ্ত করে রয়েছেন। অতএব যারা তাওবা করে এবং আপনার পথ অনুসরণ করে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আপনি তাদেরকে রক্ষা করুন’।(গাফির ৭)
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ
❇ হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে ক্ষমা করুন; এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রাখবেন না; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়াবান, পরম দয়ালু।(আল-হাশর ১০)
رَبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ
❇ হে আমাদের প্রতিপালক,আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে।(আল-মুমতাহিনা ৪)
رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا ۖ إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
❇ হে আমাদের রব,আপনি আমাদেরকে কাফিরদের উৎপীড়নের পাত্র বানাবেন না। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(আল-মুমতাহিনা ৫)
رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
❇ হে আমাদের রব,আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’(আত-তাহরীম ৮)
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
❇ হে পালনকর্তা,তাদের(মা-বাবা) উভয়ের প্রতি রহম কর,যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।(সুরা বনি ইসরাইল ২৪)
لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
❇ (হে পালনকর্তা) আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমি পাপী।(আল আম্বিয়া ৮৭)
اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ
❇ (হে পালনকর্তা) আমাদেরকে সরল পথ দেখান। সে সমস্ত লোকের পথ,যাদেরকে আপনি নেয়ামত দান করেছেন।(সুরা ফাতিহা ৬-৭)

বন্ধুরা--➲ আমরা যাতে প্রতিদিন উল্লেখিত দোয়াগুলি পাঠ করতে পারি পরম করুণাময় আল্লাহ আমাদের সবাইকে সে তাওফীক দান করুন।মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।

খাবার একজনের খেয়েছিল আশিজন!

✏ইমরান বিন বদরী
প্রসিদ্ধ রাবি অর্থাৎ আমার রাসুলের (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) হাদিস বর্ণাকারীদের অন্যতম হচ্ছেন হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু,যার প্রতিটা হাদিসের বর্ণনা যেন নবী প্রেমে সিক্ত।মুজেজা এ রাসুলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনার বর্ণনাকারী হযরত আনাস ইবনু মালিককে দেখা যায়।তেমনি একটি হাদিস শরীফ আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম।যে হাদিসের বাণী গুলির প্রতি হযরত আনাসের (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মত ভালবাসার দৃষ্টিতে থাকালে স্পষ্ট হয়ে যায় সাধারণ আর অসাধারণের পার্থক্য।সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহপাক আমাদের সবার মনে প্রিয় হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালিন,হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের প্রতি বর্ণনাকারীর মত ভালবাসা সৃষ্টি করে দিক।আমীন।

আসুন মূল হাদিসে যাওয়া যাক।হযরত আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু বলেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ صَنَعَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ لِلنَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ خُبْزَةً وَضَعَتْ فِيهَا شَيْئًا مِنْ سَمْنٍ ثُمَّ قَالَتِ اذْهَبْ إِلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَادْعُهُ قَالَ فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ أُمِّي تَدْعُوكَ . قَالَ فَقَامَ وَقَالَ لِمَنْ كَانَ عِنْدَهُ مِنَ النَّاسِ " قُومُوا " . قَالَ فَسَبَقْتُهُمْ إِلَيْهَا فَأَخْبَرْتُهَا فَجَاءَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ " هَاتِي مَا صَنَعْتِ " . فَقَالَتْ إِنَّمَا صَنَعْتُهُ لَكَ وَحْدَكَ . فَقَالَ " هَاتِيهِ " . فَقَالَ " يَا أَنَسُ أَدْخِلْ عَلَىَّ عَشْرَةً عَشْرَةً " . قَالَ فَمَا زِلْتُ أُدْخِلُ عَلَيْهِ عَشْرَةً عَشْرَةً فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا وَكَانُوا ثَمَانِينَ
উম্মু সুলাইম রাদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য রুটি তৈরি করলেন এবং তাতে কিছু ঘি ঢেলে দিলেন? অতঃপর তিনি (আমাকে) বলেন,তুমি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট যাও এবং তাঁকে দাওয়াত দাও।রাবী বলেন,আমি তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, আমার মা আপনাকে দাওয়াত দিয়েছেন।রাবী বলেন,আমি তাদের আগেই বাড়ী পৌঁছে মাকে এ খবর জানালাম।ইতোমধ্যে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে বলেনঃ তুমি যা তৈরি করেছো,তা নিয়ে এসো।মা বলেন,আমি তো মাত্র আপনার একার পরিমাণ খাবার তৈরি করেছি।তিনি বলেনঃ তাই দাও।তিনি আরও বলেনঃ হে আনাস! দশজন দশজন করে আমার কাছে ভেতরে পাঠাও।তিনি বলেন,আমি দশজন দশজন করে তাঁর নিকট পাঠাতে থাকি।তারা সবাই আহার করলেন,এমনকি সবাই পরিতৃপ্ত হলেন,আর তারা ছিলেন আশিজন।--সুনানে ইবনে মাজাহ।

পুজার নয়-আজানের ধ্বনি শুনতে চাই।

════ ✏ইমরান বিন বদরী
পরিবর্তনশীল সমাজে অধঃপতনটাই আজ পরিলক্ষিত।আধুনিকতা মানুষকে সভ্য করছে নাকি ধবংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে সে দিকে দৃষ্টিপাত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য বলে মনেকরি।বর্তমানে নগ্নতাকে তথাকথিত আধুনিকতা মনেকরে সমাজকে বিশেষ করে মুসলিম সমাজকে ধবংস করার যে মৌন প্রয়াস চলছে তার প্রতি দৃষ্টিপাত না করলে আগামীতে প্রতিটি পরিবারে আজানের ধ্বনিতে চুপ থেকে জাওয়াব দেয়ার লোক খোজে পাওয়া যাবেনা।মুসলিম সমাজে আশির দশকে টিভি দেখা এবং ভিডিও করাকেও ভাল চোখে দেখা হতনা এটাকে গুনাহের পর্যায়ে ভাবা হত কিন্তু আজ পরিবর্তনশীল সমাজে সবকিছু যেন পর্যায়ক্রমে সহনশীল হয়ে পড়েছে।এভাবে আগামীতে হয়ত আরো অনেক পরিবর্তন দেখা যাবে।ফলে এ পরিবর্তনের অন্তরালে এ দেশীয় সংস্কৃতিতে রক্ষণশীল মুসলিম সমাজে যে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন লক্ষনীয় তা হয়ত একদিন ধর্মীয় অনুষাসনের বন্ধনকে ধবংস করে দেবে।দূর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য যে আজ বাংলাদেশে প্রতিটি পরিবারে যাদের সেটেলাইট সংযোগ আছে তারাই বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে।দেশীয় চ্যানেলে আজানের ধ্বনি শুনা গেলেও ভারতীয় চ্যানেলে এখন পুজার ধ্বনি শুনানো হচ্ছে।কী দূর্ভাগ্য জাতী আমরা !! মুসলিম পরিবার আজ উলুর ধ্বনি আর পুজার মন্ত্রশব্দ শুনতে যেন অব্যস্থ হয়ে পড়েছি।পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত,হামদে বারী তা'য়ালা কিংবা মহা নবীর গুনগানের শব্দের পরিবর্তে মুসলমানের ঘরে ভারতীয় সিরিয়ালের রামায়ন বা গীতা পাঠের শব্দ শুনা যাচ্ছে! এটাই কি প্রত্যাশা ছিল একটি মুসলিম পরিবারে? আজানের শব্দে অযু করে নামাজের প্রস্তুতির কথা বাদেই দিলাম আপনি,আমি,আমরা এতে কি শিখছি এবং আমাদের সন্তানদের কী শিখাচ্ছি,আগামীর জন্য কোন প্রজন্মকে রেখে যাচ্ছি? একটুও কী ভাবার প্রয়োজন আছে বলে মনেহয় না? 



আজ ভারতীয় বিভিন্ন চ্যানেল যেন অঘোষিত পূজার তালিম দিয়ে যাচ্ছে মুসলমানের প্রতিটা ঘরে।সংসারের প্রতিটা স্তরে আজ ঝগড়ার প্রসর বসছে এসব বিজাতীয় মনোভাবের প্রভাবে।মেয়েরা শিখছে কীভাবে ধবংস করা যায় একটি সুন্দর শ্রদ্ধাবোধের সংসার।দিনের পর দিন হিন্দুয়ানী কালচারে অবস্থ হয়ে কুফুরীর দিকে পদার্পন করছে।এভাবে হাজারো প্রচারণায় আমাদের বিশ্বাসে কুফুরী ডুকিয়ে দেয়া হচ্ছে যাতে আমরা মনের অজান্তে কালের অতৈ গর্তে নিমজ্জিত হতে পারি।এটি একটি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের জন্য খুবি ভয়ঙ্কর এবং অধিক ক্ষতিকারক বলে মনেকরি। আসুন বর্জনীয় এসব বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে রক্ষার জন্য সচেতনতার বন্ধনে আবদ্ধ হই।ঘৃণার সাথে একত্রে প্রতিবাদ জানাই প্রতিটি মুসলমানের ঘরে উলু নয় আজানের ধ্বনি শুনতে চাই।এখনি সময় এই ঘৃণ্য অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধের দাবী জানানো।আমি আশা করবো প্রত্যেকে সমমনা পোষ্ট করে যাবেন, ফলে একদিন দেখবেন বিজাতীয় কালচার থেকে দেশ ও দশ মুক্ত হতে চলেছে।